প্রতিনিধি ২ জুলাই ২০২২ , ৭:২৪:২০ প্রিন্ট সংস্করণ
মতলব প্রতিনিধি:
আশুলিয়ার ইউনুস আলী স্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক উৎপল কুমার সরকারকে হত্যা ও মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যখন প্রতিবাদের ঝড় বইছে ঠিক তখনই মতলব দক্ষিন উপজেলার বরদিয়া কাজী সুলতান আহম্মেদ উচ্চবিদ্যালয় এর এক খন্ডকালীন শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী দ্বারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
গত ৩০ জুন বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর বিদ্যালয়টির নবম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস চলাকালে শ্রেণিকক্ষে ঘটনাটি ঘটে ।
জানা যায়, এ ব্যাপারে ওই শিক্ষক ওই দিন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। শিক্ষকের নাম চয়ন মজুমদার (৪০)। তিনি বিদ্যালয়টির ইংরেজি বিষয়ের খন্ডকালীন সহকারী শিক্ষক। তাঁর বাড়ি চাঁদপুর শহরের গুয়াখোলা এলাকায়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বাড়ি উপজেলার বরদিয়া এলাকায়। তার বাবা ওই বিদ্যালয়ের সামনে চা-বিস্কুট বিক্রেতা।
শিক্ষক চয়ন মজুমদার বলেন, গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়ের ওপর পাঠদান করছিলেন। এ সময় ওই শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে তাঁর সঙ্গে অবাধ্য আচরণ ও বেয়াদবি করলে তিনি তাকে মৌখিকভাবে শাসন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থী টেবিল থেকে উঠে সকল শিক্ষার্থীর সামেন শারীরিকভাবে তাঁকে (শিক্ষককে) লাঞ্ছিত করে দৌড়ে পালিয়ে যান।
পরে তিনি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আজ ০২ জুলাই শনিবার দুপুর বারোটায় প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে গোপনীয়ভাবে সমাধানের জন্য বৈঠকে বসেন। তবে বিষয়টি পুলিশ বা প্রশাসনের কাউকে জানাননি ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহদাত হোসেন ।
এদিকে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের ৪/৫ জন শিক্ষার্থী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, স্যারকে লাঞ্ছিত করার পর থেকে সে বিদ্যালয়ে আসছে না। আমরা এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার চাই। অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থী এ ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছে। তাই তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তার বাবার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগটি বন্ধ পাওয়া যায়।
অপরদিকে, বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, ওই শিক্ষক ঘটনাটির বিচার চেয়ে তাঁর কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি সুরাহার জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত নিব। স্থানীয়ভাবেই এটি মীমাংসার চেষ্টা চলছে। না হলে আপনাদের জানাবো।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুর রহিম খান বলেন আপনার কাছ থেকে বিষয়টি এখন শুনলাম এখনো কোন অভিযোগ পাইনি তবে বিষয়টি আমি দেখবো। মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, বিষয়টি জেনেছেন। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাননি। পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।