রংপুর

উলিপুরে আমন ধানের বাম্পার ফলন

  প্রতিনিধি ১৮ অক্টোবর ২০২৩ , ৩:৫০:৪৫ প্রিন্ট সংস্করণ

উলিপুরে আমন ধানের বাম্পার ফলন

কুড়িগ্রামের উলিপুরে আমন ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঠের যে দিকে চোখ যায়, সেদিকেই সবুজের সমারোহ। ধানের চারা থেকে বের হওয়া শিষ দোল খাচ্ছে বাতাসে। তা দেখে মন ভরে উঠছে কৃষকের। অনেকেই আবার খেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত। আমনের বাম্পার ফলন আর নবান্নের আনন্দে আজ বাংলার মাঠ-ঘাট ভরে উঠেছে সোলানী ফলন। বিভিন্ন এলাকায় পাঁকা ধানের শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন। কৃষাণ-কৃষাণীদের মনে বইছে আনন্দের বন্যা। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর ভালো ফলনের আশা করছেন উপজেলার কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১টি পৌরসভা সহ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৪ হাজার ৫’শ হেক্টর। যা অর্জিত হয়েছে ২৪ হাজার ৪’শ ৫০ হেক্টর। আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা ১০ লক্ষ ৩ হাজার ৬’শ ৬৮ মেট্রিক টন। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের প্রণোদনার মাধ্যমে বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। মাঠে গিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই পোকামাকড় নিধন সম্পর্কে পরামর্শ।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আবাদ করা জমি ধানের শিষে ভরে গেছে, আবার কিছু ধানে শিষ আসতে শুরু করেছে। কৃষকেরা পোকা দমনে কীটনাশক ব্যবহার না করে পাচিং পদ্ধতি ব্যবহার করছে। ফসলের বিভিন্ন ক্ষতিকর পোকা দমনে পোকা খাদক পাখি পাচিংয়ে বসে খাচ্ছে ক্ষতিকর পোকা। কৃষকেরা করছেন খেতের পরিচর্যা। আর কিছুদিন পরে ফসল কাটার মহোৎসবে ব্যস্ততম সময় কাটাবেন এখানকার কৃষকরা। শীতের সকাল থেকে পড়ন্ত বেলা পর্যন্ত মাঠে-মাঠে ফসল কর্তনের চিরাচারিত দৃশ্য দেখা যাবে গ্রামজুড়ে। চলবে উপজেলার গ্রামে-গ্রামে ও মাঠের পর মাঠ সোনালী ফসল ঘরে তোলার মহা উৎসব। বাতাসে ছড়ানো আমনের মৌ-মৌ গন্ধ আর কৃষক-কৃষাণীদের ফসল ঘরে তোলার কর্মব্যস্ততা এ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অন্যরকম আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করবে।

উপজেলার দলদলিয়া ইউনিয়নের পাতিলাপুর গ্রামের কৃষক মহাসিন মিয়া জানান, এবারে আমন ধান প্রায় ৫ একর জমিতে লাগিয়েছি। বাম্পার ফলন হয়েছে। এ পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। ধানের আশা করছেন ৩’শ মণ। যা বাজার মূল্য হয় ৩ লক্ষ টাকা। খরচ হওয়ার পরেও ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা লাভের আশা করছেন বলে জানান তিনি।
জুম্মাহাট কাঠালবাড়ি এলাকার সুশান্ত কুমার সরকার বলেন, এবারে ৬৫ শতক জমিতে আমনের চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় ৩০ মণ ধানের আশা করছেন। যা খরচের দ্বিগুণ লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকার আমন চাষিদের মধ্যে আশরাফ আলী খন্দকার, আব্দুল মালেক, আসাদুজ্জামান, কামরুজ্জামান সরকার সহ আরও অনেকে একই কথা বলেন।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোস্তফা কামাল বলেন, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে আমন চাষিদের বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই পোকামাকড় নিধন সম্পর্কে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সার্বক্ষণিক ভাবে তদারকি করায় আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশাকরি অনেক লাভবান হবেন বলে জানান তিনি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ মোশারফ হোসেন বলেন, আমন ধানের আবাদ এবার খুবই ভালো হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কৃষি কর্মকর্তারা নিয়মিত মাঠে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে। এছাড়াও ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কৃষকদের আরও সচেতন করা হচ্ছে। যেন কৃষকেরা অধিক লাভবান হতে পারেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by