ঢাকা

কালিয়াকৈরে কাজ না করেই রাস্তার প্রকল্পের টাকা ভাগাভাগির অভিযোগ

  প্রতিনিধি ১০ মে ২০২১ , ৭:০৯:১৬ প্রিন্ট সংস্করণ

শোয়াইব মৃধা, কালিয়াকৈর (গাজীপুর) :

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে কাজ না করেই রাস্তার পুণঃনির্মাণ প্রকল্পের টাকা মিলেমিশে ভাগাভাগি করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, সচিব, ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও সড়কের কাজে কথা বলে বাড়ি প্রতি টাকা তোলে নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় লোকজন।

এলাকাবাসী, ইউনিয়ন পরিষদ ও সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কালিয়াকৈর উপজেলার আটাবহ ইউনিয়নের বড়ইছুটি এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। গত ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ওই ইউপি পরিষদের ওই এলাকার মুসলেমের বাড়ি হতে ফজল হকের বাড়ি অভিমুখে প্রকল্প নামে কাঁচা রাস্তার পুনঃনির্মাণের কাজ আসে। স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর কর (১%) অর্থায়নে ১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৩৫৬ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৫ ফুট প্রস্থের ওই কাঁচা রাস্তাটি পুনঃনির্মাণের কথা।

কিন্তু বাস্তবায়ন কাল ২০১৯-২০ অর্থ বছর দেখিয়ে নেইম প্লেট দিলেও ওই রাস্তার কাজ হয়নি আজও। ওই প্রকল্পের সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য এস, এম, আশরাফুল ইসলাম, সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল গণি ও সচিব আনোয়ার হোসেন। ওই সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও স্থানীয় ওয়ার্ড আ.লীগের জামাল উদ্দিন মিলে রাস্তার বরাদ্ধের টাকা উত্তোলনের পর ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। এরপর ওই ইউপি সদস্য আশরাফুল ও আ.লীগ নেতা জামাল দুজনে রাস্তা করার কথা বলে বাড়ি প্রতি ৩০০ টাকা করে তোলেন। ওই টাকাও তারা ভাগাভাগি করে নেন।

কিন্তু দীর্ঘদিনেও ওই রাস্তার কাজ হয়নি। এতে স্থানীয় লোকজন তাদের ৩০০ টাকা করে ফেরত চান। পরে বাধ্য হয়ে গত ২-৩ মাস আগে ওই ইউপি সদস্য আশরাফুল ওই রাস্তায় অল্প কিছু মাটি ফেলেন। রাস্তার বেশিরভাগ অংশেই রয়েছে পানি নেয়ার ড্রেন, বাশঁ ঝাড়, বিভিন্ন আগাছা। স্থানীয় লোকজন ক্ষোভ প্রকাশ করে তাদের দেয়া টাকা ফেরতের দাবী জানান। স্থানীয় রহমজান বেগম বলেন, ‘শুনেছি রাস্তার কাজ আইছে। কাজ করার কথা কইয়া মেম্বার আশরাফুল ও নেতা জামাল আমাগো কাছ থেকে বাড়ি প্রতি ৩০০ টাকা করে নিয়েছে। কিন্তু কই রাস্তার কাজ তো করল না, আমাগো টাকাও ফেরত দিলো না’। ফজল হক ও তার স্ত্রী নার্গিস বেগম বলেন, ‘আমাগো বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা করার কথা ছিল। কিন্তু রাস্তা করা হয়নি। ফলে অনেক কষ্টে আমাদের যাতায়াত করতে হইতাছে।

ধান ভাঙ্গানো সহ কোন কাজই ওই রাস্তা দিয়ে করা যায় না’। এ সময় ওই ওয়ার্ড সেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আনিছ জানান, মেম্বার ও জামাল এ রাস্তার কাজ শুরু করেছিল। কিন্তু ওই রাস্তার কাজ না করে তারা কেটে নিছে কিনা জানি না। তবে তাদের কাছে রাস্তার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন আগামী বছর কাজ করা হবে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য এস এম আশরাফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সমস্যা নেই। ঈদ মোবারক জানাবোনি। তবে গ্রামবাসীর কাছ থেকে টাকা তোলার বিষয়টি অস্বাীকার করেন তিনি। অপর অভিযুক্ত স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সদস্য জামাল উদ্দিন জানান, রাস্তার কথা বলে আমি টাকা তুলি নাই, মেম্বার তোললে তিনিই জরিমানা দিবেন। আমি রাস্তা করার কেউ না, মেম্বার আমার মামা লাগে তাই তাঁর সাথে রাস্তা কাজ করেছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আব্দুল গণি মুঠোফোনে বলেন, রোজার ঈদের পরে আপনাদের সাথে যোগাযোগ করবো।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী হাফিজুল আমিন জানান, এ ধরণের ঘটনা ঘটে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by