রংপুর

কুড়িগ্রামে হাড় কাঁপানো শীতে স্থবিরতা

  প্রতিনিধি ২ ফেব্রুয়ারি ২০২১ , ৮:১৫:৩৬ প্রিন্ট সংস্করণ

এস এম আশরাফুল হক রুবেল, কুড়িগ্রাম:

প্রচন্ড শীত ও কনকনে ঠান্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রামের মানুষ। গত কয়েকদিন ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে উত্তরের এ জেলায়। গত ক’দিন ধরে দিনে সূর্যের দেখা না মেলায় উত্তরীয় হিমেল হাওয়া বাড়িয়ে দিয়েছে ঠান্ডার মাত্রা। এ অবস্থায় তীব্র শীতে ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবন যাত্রা। দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের মুখ যেমন দেখা যায় না তেমনি রাতের বেলা কুয়াশা ঝরছে বৃষ্টির মত।

স্থানীয় আবহাওয়া অফিসের কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ সুবল চন্দ্র সরকার জানান, রবিবার সকাল ৬ টায় ও ৯ টায় দু’দফা জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস।

গত ২ দিন আগে ছিল ৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস যা দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ রকম তাপমাত্রা আগামী ১ থেকে ২ দিন অব্যাহত থাকবে বলে আভাস দিয়েছেন এ আবহাওয়া পর্যবেক্ষক। ঠান্ডার মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন জেলার খেটে খাওয়া দিনমজুর শ্রেণির মানুষজন। রিক্সাশ্রমিক নুরন্নবী বলেন, ঠান্ডা গাঁত কাটার মতো বেন্দে, রিক্সার হেন্ডেল ঠিকমত ধরা যায় না। কাজ কামাই নাই। ঠেলাগাড়ী চালক রফিকুল জানান, গত কয়েকদিন ধরে ১০০ টাকাও ইনকাম হচ্ছে না। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে আছেন।

বোরো চাষের ভরা মৌসুম চললেও কনকনে ঠান্ডায় শ্রমিকরা ঠিকমত মাঠে কাজ করতে না পারায় ব্যাহত হয়ে পড়েছে বোরো আবাদ। সুভার কুঠির আব্দুল জলিল বলেন, জমিত পানি দিছি কিন্তু ঠান্ডার জন্য হাল চাষ দিবার পারি নাই। ঠান্ডার কারণে চারা লাগবার সাহস পাবার লাগছিনা। আব্দুল করিম জানান, চারাগুলা হিমের কারণে হলুদ হয়া যাবার লাগছে বাহে। শীতোত জমি বাড়ি যাবার সাহস পাবার লাগছিনা। হাত পা জারত জমি যায়।

কনকনে ঠান্ডায় গরম কাপড়ের অভাবে দুর্ভোগ বেড়েছে জেলার সাড়ে চার শতাধিক চরের এবং শহরের বস্তি এলাকার ছিন্নমূল, হতদরিদ্র পরিবারের শিশু ও বৃদ্ধদের। শহরের সরদারপাড়া নিবাসী বয়োবৃদ্ধ রহিমউদ্দিন, ময়েজউদ্দিন অভিযোগের সুরে বলেন, মরি যাই ঠান্ডায়। কোনদিন কম্বল পামো?

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, জেলার সকল উপজেলা ও পৌরসভায় হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষের গরম কাপড়ের জন্য ৬ লাখ করে টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে যা ইতিমধ্যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। নতুন করে চাহিদা দেয়া হলেও এখনও পাওয়া যায়নি। তিনি সকলকে শীতার্ত অসহায় মানুষজনের পাশে দাঁড়ানোর আহবান জানান।

এদিকে প্রচন্ড শীতের কারনে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by