চট্টগ্রাম

বিজয়নগরে অসহায়ত্তে হাবুডুবু খাচ্ছে প্রতিবন্ধী পরিবার

  প্রতিনিধি ২৮ ডিসেম্বর ২০২২ , ৪:৫৭:৫০ প্রিন্ট সংস্করণ

আলমগীর হোসেন বিজয়নগর প্রতিনিধি ব্রাহ্মণবাড়িয়া :

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ২নং চান্দুরা ইউনিয়নের সাতগাঁও গ্রামের মৃত রওশন আলীর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছেলে মুর্শিদ মিয়া (৪৫) চার শিশুসন্তান ও সহধর্মিনীকে নিয়ে আজ প্রায় ২৫ বছর যাবত গৃহহীন, অনাহারে অর্ধাহারে দিনাপাত করে যাচ্ছে, যেন সহযোগিতার হাত বাড়ানোর কেউ নাই। খবর নিয়ে জানা যায় মুর্শিদ মিয়া একজন (জন্মান্ধ) দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সে তার পরিবার নিয়ে অতি কষ্টে দিন যাপন করিতেছে। তার চার সন্তানের মধ্যে তিনটি ছেলে সন্তান থাকলেও, বড় সন্তান ইসমাইল (১০) বাক ও শারীরিক প্রতিবন্ধী, তার মাথায় সমস্যা থাকার কারনে আগুন পানির পার্থক্য বুঝেনা। দ্বিতীয় সন্তান সিয়াম (৮) কিডনি সমস্যা জনিত কারনে রোগাক্রান্তে কষ্ট করিতেছে, যার চিকিৎসার ব্যয় ক্ষমতা কতটুকু বুঝার আর বাকি থাকলনা। এক কথায় বলা যায় এই স্বাধীন বাংলাদেশে এমন অসহায় পরিবার খুবই কম আছে বলে মনে হচ্ছে।
অসহায় মুর্শিদ মিয়া নিজের পেটের ক্ষুধা নিবারণে ও ৬ সদস্য পরিবারের মুখে আহার তুলতে নিজে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও তিন চাকার ভেন চালিয়ে আইসক্রিম ও আচার বিক্রি করে কোন রকম বেঁচে থাকার যুদ্ধে আছে। সমাজে বৃত্তবান থাকলেও এমন অসহায় পরিবারের খোঁজ নেওয়ার দায়িত্ব কেউ নিতে চায় না, একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই যেন আশ্রয়স্থল।
অসহায় মুর্শিদ মিয়া জাতীয় ভোরের দর্পণ প্রতিনিধি আলমগীর হোসেন কে বলেন, আমি সমাজের খুবই অবহেলিত, আমার এক বাচ্চার কিডনির সমস্যায় গাছ তলায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে, এবং প্রথম সন্তান এমনি প্রতিবন্ধী যে কুকুরের দুধ প্রস্রাব পায়খানা পর্যন্ত খায়। আর আমি তো সমাজে অভিশপ্ত জীবন নিয়ে দৃষ্টিহারা হয়েও কোনরকম বাড়ি বাড়ি ভাঙ্গারি দিয়ে আচার বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছি। আমি ও আমার বাচ্চা প্রতিবন্ধী হয়েও সরকারের কোন ভাতা পাইনি, প্রতিনিধিরাও কোন দায়িত্ব পালনে এগিয়ে আসেনি। মোট কথা সরকারের কোন সহযোগিতা পাইতে আমাকে কোন সহযোগিতা করা হয়নি। সে আরো বলেন, তার দুঃখ বাংলাদেশ সরকারের প্রধান, জননেত্রী শেখ হাসিনা গৃহীনদের ১০০% গৃহ দানের প্রকল্প হাতে নিলেও, আমি একজন অসহায় গৃহহীন হয়েও কোন দরদীর দরদ লাগলো না। আমি কয়েকবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়ে বিমুখ হয়ে বিতাড়িত হয়েছি সরকারের একটা ঘরের আশায়। বর্তমানে আমি কোন এক বাড়িতে ভাড়ায় থাকবো বলে ঘর নিয়েছি। কিন্তু তাতেও মালিককে ভাড়া দিতে পারি নাই বলে, প্রতি নিয়ত কথা শুনে থাকতে হচ্ছে। এখন আমার আবেদন আমি সরকারের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে হৃদয়বান ব্যক্তিদের কাছে, তারা যদি আমার পরিবারের দিকে একটু সুদৃষ্টি দিতেন, তাহলে হয়তোবা জীবনটা বেঁচে যেত। এবং সরকারের দেওয়া গৃহে মুক্ত মনে হায়াত অনুযায়ী বেঁচে থাকতাম। আমি চাইনা খানা, চাই একটা মাথা গুঁজার ঠাই বলে মুর্শিদ মিয়া কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by