চট্টগ্রাম

লক্ষীপুরে ইউএনও কর্তৃক চেয়ারম্যানকে লাঞ্ছিত, ডিসি বরাবর অভিযোগ

  প্রতিনিধি ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ , ৫:৫৪:০২ প্রিন্ট সংস্করণ

মোহাম্মদ হাছান, চন্দ্রগঞ্জ(লক্ষীপুর) প্রতিনিধি :

লক্ষীপুর সদর উপজেলার ১০নং চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিনকে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকাশ্যে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল, শারিরিক ভাবে লাঞ্চিত, লাথি মেরে খালে ফেলে দিবে এবং তুলে নেওয়ার হুমকী ধমকি দিয়েছে। এ ঘটনায় চন্দ্রগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ি, এলাকাবাসী ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ বিষয়ে চেয়ারম্যান গত রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারী) জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন।
জানাযায়,গত সোমবার (৩০ জানুয়ারী) সন্ধ্যার পরে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন চন্দ্রগঞ্জ মাছ বাজার বহুতল শেড নির্মাণ কাজ আকস্মিক পরিদর্শন করতে আসেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা চেয়াম্যানকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কর্তৃক নিযুক্ত ঠিকাদার কাজ শুরু না করার কারণ জানতে চান এবং এক পর্যায়ে উত্তোজিত হয়ে চেয়ারম্যানকে মা বাবা তুলে অশ্লীল গালাগাল, লাথি মেরে খালে ফেলে দিবেন এবং তুলে নিয়ে যাবেন বলে হুমকী ধমকী দিতে থাকেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার এমন অশ্লীল এবং অশালীন আচরণে ইউপি চেয়ারম্যান ও ঘটনাস্থলে উপস্থিত চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক, প্যানেল চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম (শিপন খলিফা), ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য আব্দুর রহমান আরজু ও উপস্থিত ব্যবসায়িরা হতভম্ব হয়ে যান। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মত একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার এমন আচরণ কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছেন না বাজারের ব্যবসায়ি, জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় রাজনৈতিক মহল।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এর আগে একই ভাবে সদর উপজেলার চরশাহী, কুশাখালী, মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সাথে অশ্লীল আচরণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চন্দ্রগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আবুল কাশেম চৌধুরী জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অশ্লীল আচরণের কথা জেলা প্রশাসকের সাথে স্বাক্ষাৎ করে প্রতিকার চেয়েছি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত চন্দ্রগঞ্জ ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম (শিপন খলিফা) ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য আব্দুর রহমান আরজু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং তিনি মানসিক ও শারিরীকভাবে অসুস্থ তাই সিকিৎসার জন্য ঢাকা রওয়ানা হয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
গালি দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন, চেয়ারম্যানের সাথে তেমন কিছুই ঘটেনি। চন্দ্রগঞ্জ বাজার নিয়ে স্থানীয় দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। একটি পক্ষ চেয়ারম্যানকে ভুল বুঝিয়েছে।
লিখিত অভিযোগে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন লক্ষীপুর জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ। তিনি বলেন, ‘ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে তদন্ত করে দেখা হবে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে ইউএনওর বিরুদ্ধে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, লক্ষীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন এর আগে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত থাকা কালে হাতিয়া দ্বীপ সরকারি কলেজের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করায় কলেজ শিক্ষার্থীরা তাকে অপসারনের দাবীতে মানববন্ধন ও ক্লাশ বর্জন অব্যাহত রাখলে আন্দোলনের মুখে তাকে লক্ষীপুর সদর উপজেলায় বদলী করা হয়।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by