ঢাকা

গাজীপুরে অনলাইন জন্মনিবন্ধন জটিলতায় শিক্ষার্থীরা

  প্রতিনিধি ২৭ মে ২০২১ , ৯:১৭:৩৩ প্রিন্ট সংস্করণ

মঞ্জুর হোসেন মিলন, গাজীপুর:

সার্ভার জটিলতায় গাজীপুরে অনলাইন জন্মসনদ পেতে দুর্ভোগে পড়েছেন নাগরিকরা। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি খুলতে এবং বিভিন্ন প্রয়োজনে অনলঅইন জন্মসনদের জন্য বিপাকে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন ও ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডসহ সকল নিবন্ধন অফিসে ভীর করছেন জন্মসনদ প্রত্যাশীরা। খোঁজ নিয়ে এবং নিবন্ধন অফিস ঘুরে দেখা যায়, জেলার অনলাইন নিবন্ধন অফিসগুলোতে প্রতিদিন অনলাইন জন্মসনদের জন্য ভীর করছেন মানুষ। নিবন্ধন কার্যক্রমের সাথে জড়িতদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সার্ভারে একযোগে বেশী ব্যবহারকারী হওয়ায় সফটওয়্যারটি এই চাপ বহন করতে পারে না। আবার জন্ম- মৃত্যু নিবন্ধন সংস্থা ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা, সিটি কর্পোরেশন ও ক্যান্টনমেন্ট বোড এলাকার জনসাধারণ আগে যারা ম্যানুয়ালি জন্মনিবন্ধন করে ছিলেন অনলাইন সনদ পেতে তাদেরই এখন বেশী কষ্ট হচ্ছে।

গাজীপুর জেলা প্রশাসন সুত্র বলছে, জাতিসংঘ শিশু তহবিল ইউনিসেফের সহায়তায় ২০১০ সালের অক্টোবর মাস থেকে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন কার্যক্রম চালু করা হয়। জেলার ৩৯টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৩টি পৌরসভা, একটি সিটি কর্পোরেশন ও গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডে জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম চালু আছে। চলতি মাসের শুরু থেকেই সার্ভারে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়ায় জন্ম নিবন্ধনের কার্যক্রমে বিপত্তি দেখা দেয়। জেলার ৩৯টি ইউনিয়ন পরিষদ, ৩টি পৌরসভা, একটি সিটি করপোরেশন, গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডসহ ৫১টি অফিস এই কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

 

একাধিক সুত্র বলছে, সার্ভারটিতে তিন হাজারের বেশি ব্যবহারকারী একযোগে ব্যবহার করলে সফটওয়্যারটি এই চাপ বহন করতে পারে না। আর রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিস নতুন ওয়েবসাইটে জন্মনিবন্ধন সংক্রান্ত কাজের জন্য নতুন পাসওয়ার্ড এখনো দেয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে গিয়ে দেখা যায়, করোনার মধ্যেও জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন শাখায় নারী-পুরুষের ভিড়। বেশির ভাগই সন্তানদের স্কুলে ভর্তির জন্য জন্ম সনদ নিতে এসেছেন। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও সনদ পাচ্ছেন না।

গাজীপুর সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর শিক্ষাথী সামান্তা ইসলাম আঁখি বলেন, কলেজে জন্মনিবন্ধন সনদের হালনাগাদ অনলাইন তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। এ জন্য অনলাইনে আবেদন করেছি কিন্তু সিটি কর্পোরেশন বলছে একমাস সময় লাঘবে। এছাড়া নিজের অনলাইন জন্মসনদ পেতে বাবা- মা’র অনলাইন নিবন্ধন করতে হয়। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নগর ভবন অফিসের জন্মনিবন্ধন কাজে নিয়োজিত মলয় কুমার দাস জানান, সার্ভার জটিলতায় নাগরিকদের সনদ দেয়া যাচ্ছে না। বুদ্ধপূর্ণিমার সরকারি ছুটির দিন গত ২৬ মে বুধবার জেলার কাপাসিয়া উপজেলা সদর ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে দেখা যায় নারী- পুরুষদের ভীর। কথা হয় স্কুল ছাত্রীর অভিভাবক রিমিন আক্তার নামে এক নারীর সাথে। নবম শ্রেণীতে পড়–য়া মেয়ে মেহেরীন মঞ্জুর ইকরার ইউনিক আইডি নিবন্ধনে জরুরী ভিত্তিতে জন্মনিবন্ধন সনদ দরকার। এসময় তাঁর মতো আরও ২০/২২ জন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জন্মনিবন্ধন কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ঘিরে ভীর করছেন।

 

ইউপি সচিব রফিকুল ইসলাম বলেন, সার্ভারে সমস্যা থাকায় সনদ দিতে দেরি হচ্ছে। আমরা দিনে এবং সারারাত জেগে কাজ করছি। দিনের আবেদন দিনে পূরণ করা যাচ্ছে না। আর কিছু পুরাতন আবেদনও রয়েছে। সরকারি ছুটির দিনও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি। মির্জাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মিজানুর রহমান বলেন, জন্মনিবন্ধনের সার্ভার জটিলতায় দিনে সব মিলিয়ে এক ঘণ্টার মতো কাজ করা যায়। সারা দেশে একই ওয়েবসাইটে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের কাজ হয়। সনদ পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে নাগরিকদের। ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত অনলাইন জন্মনিবন্ধন চাওয়ায় চাপ বাড়ছে।

 

জয়দেবপুর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উজ্জলা রাণী সাহা বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্মনিবন্ধন নম্বর অনলাইনে হালনাগাদ তথ্য চাওয়া হয়েছিল। জটিলতার জন্য সরকার সময় বাড়িয়েছে। তবে সকলকে অনলাইন নিবন্ধন করে ফেলা উচিৎ। রেজিস্ট্রার জেনারেল অফিসের বরাত দিয়ে গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানিয় সরকার উপ-পরিচালক (উপসচিব) মো: কামরুজ্জামান ভোরের দর্পণকে বলেন, যে সকল দপ্তরে রেজিষ্ট্রার বা ভলিয়মে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন তালিকা রয়েছে এমন পুরনোদের অনলাইন নিবন্ধন করতে ইউজার আইডি চাওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, দ্রæতই কার্যক্রম চালু করতে পারবো।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by