ঢাকা

ডিবি কার্যালয়ে যুবলীগ নেতাকে নির্যাতন, ২ ওসিসহ ৭ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

  প্রতিনিধি ৭ অক্টোবর ২০২০ , ১২:২৬:৪১ প্রিন্ট সংস্করণ

নির্যাতনের শিকার যুবলীগ নেতা শেখ আরাফাত হোসেন

ভোরের দর্পণ অনলাইন:

ফরিদপুরে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কার্যালয়ে যুবলীগ নেতাকে চোখ বেঁধে নির্যাতন করার ঘটনায় দুই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার ফরিদপুরের এক নম্বর আমলী আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতনের শিকার যুবলীগ নেতা শেখ আরাফাত হোসেন (৩৬)।

আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ফারুক হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ফরিদপুরকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে আগামী ৭ জানুয়ারি।

শেখ আরাফাত হোসেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের শেখপুরা গ্রামের শেখ মোশাররফ হোসনের ছেলে। শেখ আরাফাত ভাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

যে সাত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তারা হলেন- ফরিদপুর ডিবি পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাদুজ্জামান আহাদ (৫৫), ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুর রহমান (৪৯), ভাঙ্গা থানার চার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এবাদুল হক মোল্লা (৩৫), আনিসুর রহমান (৪০), শামসুল হক সুমন (৩৮) ও রেজওয়ান মামুন (৩০) এবং গোয়েন্দা পুলিশের এসআই শাহীন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টার দিকে কাউলিবেড়া বাজার এলাকা থেকে পাঁচ/ছয়জন পুলিশ সদস্য একটি সাদা রঙের মাইেক্রোবাসে এসে বিনা গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় শেখ আরাফাত হোসেনকে জোরপূর্বক গাড়িতে উঠিয়ে নেন।

গাড়িতে ওঠানোর পর পুলিশ সদস্যরা তাকে মারপিট করতে থাকেন এবং তাকে নিক্সন চৌধুরীর (ভাঙ্গা, সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র দলীয় সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী) রাজনীতি করার কথা বলে। তা না করা হলে তাকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়। পরে ভাঙ্গার পুখুরিয়া এসে তাকে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। ডিবির গাড়িতে তুলে দিয়ে এসআই এবাদুল ভাঙ্গা থানার ওসিকে মোবাইলফোনে বলেন, ‘স্যার আরাফাতকে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আহাদুজ্জামানের হাতে বুঝাইয়া দিছি।’

এজাহারে আরো বলা হয়, পরে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের তৃতীয় তলায় গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে নিয়ে আসে। পরে সেখানে রাত ১১টার দিকে তাকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। ওই রাতে কয়েক দফা তাকে পেটানো হয়। জীবনরক্ষার জন্য ভুক্তভোগী হাত জোড় করে মিনতি জানালে ডিবির ওসি বলে, ‘আমি তোগে লোক না। আমি নিক্সন চৌধুরীর লোক।’

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. কামালউদ্দিন বলেন, ‘আদালত আরাফাতের দায়ের করা মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন।’

এদিকে, এ ঘটনার পর পরই ফরিদপুর ডিবি পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাদুজ্জামানকে সদরপুরের চন্দ্রপাড়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ থেকে ক্লোজ করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। তবে বর্তমানে আহাদুজ্জামান রাজবাড়ী বদলি হয়েছেন।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, ‘আদালত এ বিষয়টি তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। পিবিআই তাদের মতো করে তদন্ত করবে। পাশাপাশি আমরাও বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি। তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশের আলোকে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আরও খবর

Sponsered content

Powered by