চট্টগ্রাম

দেবীদ্বারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড দেড় কোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি ১১ দোকান ভষ্মীভূত

  প্রতিনিধি ৩১ আগস্ট ২০২১ , ৭:২৮:৫৯ প্রিন্ট সংস্করণ

দেবিদ্বার (কুমিল্লা) প্রতিনিধি :
দেবীদ্বার উপজেলার ঐতিহ্যবাহী এলাহাবাদ পূর্ব বাজারে এক ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ঔষধ, কোকারিজ, মনোহরী, বস্ত্র, লাইব্রেরী, ভেরাইটিজ, হার্ডওয়ার, বিকাশ দোকানসহ বিভিন্ন সামগ্রীর ১১টি দোকান ভষ্মীভুত হয়ে গেছে। এতে প্রায় দেড় কোটি টাকার উপরে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকা করছেন ভোক্তভূগীরা।
অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটে সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ২টায় এলাহাবাদ মধ্যবাজারে। কি ভাবে এবং কোন দোকান থেকে এ অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত তার সঠিক কোন তথ্য দিতে পারেননি ফায়ার সার্ভিস ও ভোক্তভূগী ব্যবসায়িরা।
স্থানীয়রা জানান, অনুমান রাত পৌনে ২টায় এলাহাবাদ পূর্ব বাজারের মধ্যগলিতে ওই অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত ঘটে। বাজার নৈশপ্রহরীদের সূর চিৎকারে এলাকাবাসী বাজার এবং বাড়ির মসজিদের মাইকে অগ্নিকান্ডের সংবাদ ছড়িয়ে দিলে তাৎক্ষনিক ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়িরাসহ শত শত মানুষ এসে আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হন। অপরদিকে ট্রিপল নাইনে ফোন করলে, বুড়িচং, ও মুরাদনগর ফায়ার সার্ভিসের ২টি ইউনিট রাত ৩ টায় ঘটনাস্থলে এসে প্রায় ২ ঘন্টাব্যপী অভিযান চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনেন। ততক্ষনে ১১ দোকানের সমস্ত মালামাল সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
ইনসাফ মেডিকেল হল ও বিকাশ সার্ভিস সেন্টারের মালিক কান্নাবিজড়িত কন্ঠে বলেন, আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি। নগদ টাকা সহ প্রায় ৬০লক্ষাধিক টাকার মালামাল সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ব্যবসায়ে ব্যাক্তিগত পূঁজি ছাড়াও ব্যাংক লোনের প্রায় ২০লক্ষ টাকা বিনীয়োগ ছিল আমার। আগুনে আমাকে পথে বসিয়েছে।
ব্যবসায়ী  প্রবাসী বাবুল মিয়া বলেন, গত সোমবার রাত ৮টায় দোকান বন্ধ করে বাসায় চলে যাই। রাত ২টার দিকে মসজিদের মাইকে আগুন লাগার সংবাদ শুনে বাজরে এসে দেখি আগুন লেগেছে। আমার হার্ডওয়ার ও ফার্নিচারের দুটি দোকানের সকল মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সব শেষ! আমার এখন পথে বসার উপক্রম।
আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত নজরুল ইসলাম কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ব্রাক ব্যাংক থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ নিয়ে হার্ডওয়্যারের দোকান দিয়েলিাম। দোকানের আয় দিয়ে পরিবারের খরচ চলতো। রাতে পাহারাদার কবিরের মোবাইল ফোনে আগুনের সংবাদ শুনে বাজারে এসে দেখি আমার দোকানের ১৫/১৬ লাখ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এখন আমার পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নাই।
এছাড়াও আরো যেসব দোকান ভষ্মিভুত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে,- অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য তমিজ উদ্দিনের সৈনিক বস্ত্রালয়, মোস্তফা কামালের সামিয়া ষ্টোর, ইসমাইল হোসেন’র মিম ভেরাইটিজ ষ্টোর, আজাদ কামাল’র বাবরি ফ্যাশন, মহসীন ভূইয়ার কালেকশন’,শাহীন আলমের শাহীন ট্রেডার্স, এবং উন্নত জাতের একটি কবুতর’র দোকান।
মুরাদনগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সাব- অফিসার আব্দুর রব বলেন, সংবাদ পেয়ে আমরা মুরাদনগর ও বুড়িচং থেকে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যেয়ে প্রায় ২ ঘন্টাব্যাপী অভিযানে আগুন নিয়ন্ত্রনে এনেছি। তবে কি কারনে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত এবং ভষ্মিভূত ১১টি দোকানের ক্ষয়ক্ষতি পরিমান কত তা এমূহুর্তে বলতে পারবনা। তা তদন্ত কমিটি গঠনপূর্বক ওই কমিটির তদন্ত রিপোর্ট আসার পরই বলতে পারব।
শ্রীকাইল বদিউল আলম ডিগ্রী কলেজ’র প্রভাষক অধ্যাপক মোঃ সেলিম সরকার জানান, ক্ষতিগ্রস্থ সকল দোকান মালিক ব্যক্তিগত পূঁজী ছাড়াও ব্যাংক লোনের উপর নির্ভর ছিল, বর্তমানে নিঃস্ব ব্যবসায়িদের উন্নয়নে এবং ঘুরে দাড়াতে বিনা সূদে বা স্বল্পসূদে লোন প্রদানে সরকারের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
এলাহাবাদ বাজার কমিটির সাধারন সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম কালু মূন্সী বলেন, অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত কিভাবে বা কার দোকান থেকে ঘটেছে তা বলা যাচ্ছেনা। আমরা যখন টের পেয়েছি তখন সবকটি দোকানের লেলিহান।
অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ দোকান,- লিমন ভেরাইটিজ ষ্টোর’র মালিক বাবুল হোসেন বলেন, নগদ টাকাসহ তার প্রায় ১৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল,  চান্দিনা ফায়ার সার্ভিসের অপর একটি টিম আসতে চাইলে ওই টিলোকজন বলছেন, বৈদ্যুতিক শর্টসাকিট থেকে ওই অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হতে পারে। নজরুল মিয়ার হার্ডওয়ার ও ব্যাটারী চার্জার দোকানের বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে ওই অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হতে পারে বলেও একাধিক ব্যাক্তি ধারনা করছেন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by