ঢাকা

চোখ জুড়ানো কেরানীগঞ্জের সরিষা খেত

  প্রতিনিধি ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ , ৭:১৮:২০ প্রিন্ট সংস্করণ

চোখ জুড়ানো কেরানীগঞ্জের সরিষা খেত

ঢাকার কেরানীগঞ্জে সরিষার বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখে-মুখে আনন্দের রেখা ফুটেছে। এবার সরিষার হলুদ ফুলে কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন স্থানের মাঠঘাট ছেয়ে গেছে। মাঠজুড়ে হলুদ ফুলের সমারোহ।

সরিষার ফুলে আকৃষ্ট হয়েই মৌমাছিরা মধু আহরণে ব্যস্ত। সেই সঙ্গে মৌমাছির গুঞ্জনে মুহরিত পুরো এলাকা। দিগন্ত মাঠজুড়ে সরিষা খেতের আল ধরে হাঁটছেন পর্যটকরা। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে দল বেঁধে ঘুরছেন হলুদের রাজ্যে। যেদিকে চোখ যায় হলুদ আর হলুদ, মাঠজুড়ে যেন হলুদ গালিচা। রঙের পাশাপাশি মুমু গন্ধ ছড়াচ্ছে বাতাসে। আর এই সৌন্দর্য কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে মৌমাছি।

এমন দৃশ্য দেখা মিলবে শহরের কাছেই কেরানীগঞ্জের মাঠ প্রাঙ্গণ জুড়ে। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা মাঠ।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,কেরানীগঞ্জ উপজেলায় কাজীর গাঁও গ্রামে সরিষা ফুলের হলুদ রঙে অপরূপ শোভা ধারণ করেছে মাঠঘাট। ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে সরিষা মাঠ জুড়ে ভিড় করছেন বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ ও শিশুসহ বিনোদন প্রেমীরা দুরন্ত শিশুরা আনন্দে আত্মহারা হয়ে ছোটাছুটি করছে।।

সরিষা মাঠ ঘুরে ঘুরে দেখছেন। কেউবা আবার মোবাইলফোনে সেলফি তুলছেন।মাঠে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা। সরিষার ফুলের চারপাশে মৌমাছির আনাগোনা বেড়ে গেছে।হলুদের রাজ্যে নিজেকে হারিয়ে মুঠোফোনে ছবি তুলছিলেন প্রকৃতি প্রেমী সুবর্ণা আক্তার। তিনি বলেন, প্রকৃতি আমার খুব পছন্দ। তাই হলুদের রাজ্য নিজেকে হারাতে এসেছি। চোখ যত দূর যায় তত দূর শুধু হলুদ আর হলুদ।

গত বছরও নানু বাড়ি এসে এখানে ঘুরতে এসেছিলাম। তবে গতবারের থেকে এবার একটু বেশি ভাল লাগতেছে। তারাছাড়া ফুলের এমন অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে এখানে রোজই হাজির হচ্ছেন আমার মতো অনেক প্রকৃতি প্রেমীরা।কেরানীগঞ্জ উপজেলার কৃষকেরা জানান, এক সময় উপজেলায় ব্যাপক পরিমাণে সরিষার আবাদ হতো। তবে হাউজিং এর কারণে কৃষি জমি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে সয়াবিনের ওপর নির্ভরতা বাড়ায় বর্তমানে অনেকটাই কমে গেছে সরিষার আবাদ। তবুও ধান চাষের পাশাপাশি ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সরিষার চাষ হয়ে থাকে।

কথা হয় কৃষক পান্নু মিয়ার এর সঙ্গে। তিনি বলেন, আমি এবছর প্রথম বারি ১৮ জাতের সরিষা চাষ করেছি। বারি সরিষা ১৮ তেলের স্বাদ অন্য যেকোনো তেলের তুলনায় ভালো। পুস্টিগুনেও সমৃদ্ধ। বিঘা প্রতি ফলন ৯-১০ মন অন্যান্য জাতের সরিষার চেয়ে বেশী। এতে তেলের পরিমাণও অন্যান্য সরিষার থেকে বেশী প্রায় ৪৬ থেকে ৪৭ ভাগ। এর গাছ বেশি বড় ও শক্ত হয়। ফলে বাতাসে হেলে পড়ে না। ফলন ভালো হলে।

আগামীতেও আমি অন্য জাতের সরিষার পাশাপাশি এই জাতের সরিষা আবাদ করবো।কৃষক করিম মিয়া বলেন, এই বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষার গাছ, ফুল ও ফল ভালো হয়েছে। আশা করছি বাম্পার ফলন হবে। তুলনামূলক কম উৎপাদন খরচে ভালো দামে লাভবান হওয়ায়। কৃষকেরা বেশির ভাগ সরিষার দিকেই ঝুঁকছেন।

সরিষায় অধিক লাভজনক হওয়ায় প্রতিবছরের মতো এবারও আবাদ করেছিকেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মহুয়া সারমিন মুনমুন ভোরের দর্পণ কে জানান, ‘আবহাওয়া অনুকূল থাকায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সরিষার আবাদ হয়েছে। এ বিষয়ে কৃষকদের আমরা সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দিচ্ছি। ইতিমধ্যে ১ হাজার ৫০০ কৃষককে সরিষার বীজ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে।

চলতি মৌসুমে কেরানীগঞ্জে ২ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আবাদ হয়েছে ২ হাজার ৫৬৫ হেক্টর জমিতে।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by