চট্টগ্রাম

রায়পুরের সয়্যাল্যান্ডে সবুজের হাতছানি, স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা

  প্রতিনিধি ২৯ এপ্রিল ২০২৩ , ৫:২০:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ

সুদেব কুরী, রায়পুর (লক্ষীপুর) প্রতিনিধি :

‘সয়াল্যান্ড’ খ্যাত মেঘনা উপক‚লীয় লক্ষীপুর জেলার রায়পুরের চরাঞ্চলে এখন সবুজের হাতছানি। যেদিকে চোখ যায়. সেদিকেই শুধু সবুজ আর সবুজ মাঠ। প্রচন্ড তাবদাহের মাঝেও হাল্কা বাতাসে দোলখাচ্ছে কৃষকের আগামীর স্বপ্ন ‘সয়াবিন’ গাছ। এ অঞ্চলের মাটি ‘সয়াল্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত। এটি জেলাকে পরিচিত করতে একটি ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। দেশের মোট উৎপাদিত সয়াবিনের ৭০ শতাংশ চাষাবাদ হয় এ জেলাতে।

চলতি বছর রায়পুর উপজেলা কৃষি বিভাগ সয়াবিন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৬২০০ হেক্টর জমিতে। কিন্তু ইতিমধ্যে সেই মাত্রাও ছাড়িয়ে গেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অন্তত: আরো ৫০০ হেক্টর বেশি জমিতে চাষাবাদ করেছেন কৃষকরা। তবে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে গত কয়েক বছর থেকে সয়াবিন চাষাবাদে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কৃষকরা। ফলে সঠিক সময়ে ও সঠিক নিয়মে সয়াবিনের বীজ বপন এবং স্বল্প মেয়াদী সয়াবিনের চাষাবাদে উৎসাহ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, চলতি মৌসুমে লক্ষীপুরে ৪০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সয়াবিন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রতি হেক্টর জমিতে গড়ে ১.৯ মেট্রিক টন থেকে ২ মেট্রিক টন সয়াবিন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেই হিসেবে এ অঞ্চলে এবার প্রায় ৭৮ হাজার মেট্রিক টন সয়াবিন উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত মৌসুমে আবাদ হয়েছে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে।

উপজেলার চর কাছিয়া গ্রামের কৃষক জাহাঙ্গীর আখন বলেন, ‘সয়াবিন চাষাবাদে অন্যান্য ফসলের চেয়ে খরচ কম হয়। তাই কৃষকরা রবি মৌসুমে সয়াবিন চাষাবাদে ঝুঁকছেন। আমন ধান কাটার পরপরই জমি চাষ দিয়ে সয়াবিনের বীজ বপন করা হয়। চাষাবাদে সার ও ওষুধ খরচ খুব কম লাগে। এছাড়া নিড়ানি দিতে হয়না বললেই চলে। এছাড়া অতিবৃষ্টিতে বা পানি জমলে হাইব্রিড জাতীয় সয়াবিন গাছ টিকতে পারেন না, তাই দেশীয় জাতের সয়াবিনের আবাদ বেশি করা হয়।’

রায়পুর উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা (বিআরডিবি) আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘বিআরডিবি থেকে উপজেলার ৭৫ জন কৃষককে সয়াবিন চাষাবাদের জন্য ২৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তহমিনা খাতুন বলেন, ‘চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অনেক বেশি উৎপাদন হবে। আমরা এক হাজার ৫০০ জন সয়াবিন চাষীকে উপকরণ সহায়তা দিয়েছি। ৫টি ধাপে তাঁদেরকে চাষাবাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আশা করছি হেক্টর প্রতি চাষীরা ১.৯ টন পর্যন্ত সয়াবিনের ফলন পাবেন।’

Powered by