চট্টগ্রাম

লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেন কয়েক ভুক্তভুগী

  প্রতিনিধি ৭ জুন ২০২৩ , ৫:৩০:১৮ প্রিন্ট সংস্করণ

লক্ষ্মীপুর  প্রতিনিধি :

আজ বুধবার(৭ জুন) দুপুরে চন্দ্রগঞ্জ বাজারে একটি ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে স্থানীয় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক পত্রিকার সংবাদকর্মীরা অংশগ্রহন করেন। থানার ওসির বিরুদ্ধে আবদুর রহমান আরজু নামের এক ভুক্তভুগী আহুত সংবাদ সম্মেলন চলাকালিন ওসি তহিদুল ইসলাম সশরীরে এসে এটি পন্ড করার লক্ষ্যে বাধা প্রয়োগ করেন। এসময় স্থানীয় চন্দ্রগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন সহ ভুক্তভুগীদের সাথে ওসির বাকবিতন্ডা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে মোঃ আব্দুর রহমান আরজু নামের ভুক্তভুগী অভিযোগ করে বলেন,আমি একজন ব্যবসায়ি। আওয়ামী লীগের ইউনিয়ন কমিটির একজন সদস্য। দুঃখ ভরাক্রান্ত হৃদয় নিয়ে আমি আমার ও আমাদের উপর যে পুলিশি নির্যাতন হয়েছে এবং হচ্ছে তা তুলে ধরার জন্য আপনাদের সমুখে হাজির হয়েছি। আমার মত নিরীহ সাধারণ জনগন নির্যাতনের শিকার হলে আমরা দ্রুত সামাধান ও ন্যায় বিচার পেতে থানা পুলিশের কাছে যাই। চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো.তহিদুল ইসলাম থানায় যোগদান করার পর থেকে আমাদের নেই ন্যায় বিচার পাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। থানাকে দুষ্টের দমন ও সৃষ্টের লালনের পরিবর্তে সৃষ্টের দমন এবং সুরে লালন ক্ষেত্রে পরিণত করেছে।

যার ফলে থানায় এখন মানুষ যেতে সাহস পায়না। বর্তমান ওসি থানায় যোগদান করার পর চন্দ্রগঞ্জ থানা এখন মিথ্যা মামলা, হয়রানি, চালবাজি ও অপরাধীদের আশ্রয় এখন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। তারই একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ আমরা কয়েকজন আজ আপনাদের সম্মুখে হাজির হয়েছি।

তিনি বলেন,আমি চন্দ্রগঞ্জ বাজারের আফজাল সড়কস্থ দেওপাড়ায় সাফওয়ান টাওয়ারের নীচ তলায় ভবনের মালিক ও ব্যাংক থেকে দোকানের পজিশন খরিদ সূত্রে মালিক ও দখলদার হই। এ জমির মূল মালিক ও ব্যাংক আমাকে আমার খরিদকৃত দোকানের পজিশন যথারীতি বুঝিয়ে দেয়। আমি উক্ত দোনের পজিশনে দোকান নির্মাণ করতে গেলে দেলোয়ার হোসেন নাদিম নামের একজন প্লাটের ক্রেতা আমাকে বাধা প্রদান করে সে আমার নির্মাণ সামগ্রী তছনছ করে কাজ করতে দিচ্ছেনা। এ নিয়ে গত ২৭ মে বিকালে তার সাথে আমার কথাকাটাকাটি হলেও কোন প্রকার মারামারি হয়নি। এ ঘটনায় আমার প্রতিপক্ষ ও চন্দ্রগঞ্জ থানার এসি তহিদুল ইসলামের  প্ররোচনায় সে পরদিন চন্দ্রগঞ্জ থানায় আমি সহ ৩ জনের বিরুদ্ধে একটি কাল্পনিক মামলা দায়ের করে।

ওসি সাহেব টাকার বিনিময়ে প্রভাবিত হয়ে আমাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ দন্ডবিধির ৩২৩,৩২৬সহ ৯টি মারাত্মক ধারায় মামলা রুজু করে আমাকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। 

ধারাগুলো জামিন অযোগ্য হলেও আদালত মামলাটি বানোয়াট বুঝতে পেরে আমাকে জামিন দিয়ে দেয়।

সাজানো ওই মামলায় একজন আসামী প্রবাসে অবস্থান করছেন আগে থেকেই। প্রশ্ন হলো প্রবাসে থেকে কি করে বাদীর উপর হামলা করলো ওই আসামী।

বিস্ময়ের বিষয় হলেও সত্যি, চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি তহিদুল ইসলামের দ্বারা একের পর এক কাল্পনিক মামলা গ্রহন সহ নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা নিয়মিত হয়ে পড়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন সহ ভুক্তভুগী কয়েকজন ভোগান্তির বর্ণনা দেন।

সংবাদ সম্মেলনের একপর্যায়ে ওসি তার পুলিশ সদস্যদের নিয়ে এসে সম্মেলন পন্ড করার চেষ্টা করেন। এসময় ওসির সাথে ইউপি চেয়ারম্যান সহ ভুক্তভুগীদের বাকবিতন্ডা হয়।

শেষে চন্দ্রগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যন নুরুল আমিন বলেন, ওসি তহিদুল ইসলাম টাকার বিনিময়ে যে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ গ্রহন করেন। তদন্ত ছাড়াই এসব সৃষ্ট অভিযোগের আলোকে অভিযুক্তদের আটক করে আনেন। এভাবে সাধারন ও নিরীহ মানুষ প্রতিনিয়ত আটকসহ বিভিন্নভাবে পুলিশী নির্যাতনের শিকার হতে হচ্ছে। সম্প্রতী আমি নিজেও এমন এক ঘটনায় ভোগান্তির শিকার হয়েছি।

আজ সংবাদ সম্মেলনে বাধা প্রদান করেন ওসি। পুলিশের এমন ভূমিকাই প্রমান করে সাধারন মানুষ পুলিশের নির্যাতনে নিরাপত্তাহীন এখানে।

জানতে চাইলে দাবীকৃত সৃষ্ট মামলার বাদী দেলোয়ার হোসেন মুঠোফোনে জানান,আরজু জমি কেনা ও দখলের নামে আমাদের ১০ তলা বিল্ডিং এর প্রবেশ পথ অবরুদ্ধ করে দেয়। এতে চলাচলে বাধাগ্রস্ত হন ৩৬ টি পরিবার। তাই থানায় মামলা দিয়েছি।

চন্দ্রগঞ্জ থানার ওসি মো. তহিদুল ইসলাম বলেন,সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা পেয়ে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে এনেছি। এ ঘটনায় নিয়ম মেনে পুলিশের তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া আমার বিরুদ্ধে আনীত আর সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।

আরও খবর

Sponsered content

Powered by