রংপুর

তেঁতুলিয়ায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা পাচ্ছে পর্যটন নির্ভর আদিবাসী পল্লী

  প্রতিনিধি ২৪ আগস্ট ২০২১ , ৮:২৬:২৩ প্রিন্ট সংস্করণ

তেঁতুলিয়া (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি :

মুজিব শতবর্ষে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর আশ্রয়নের জন্য প্রকৃতির মায়াময় দৃষ্টিনন্দন পরিবেশে গড়ে উঠছে আদিবাসী পল্লী। খরস্রোতা নদী ডাহুকের তীরবর্তী স্থান ও চারপাশে বিস্তীর্ণ সবুজে ঘেরা চা বাগানের মধ্যস্থলের এক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় সমতল ভূমিতে গড়ে উঠছে এই পল্লী। একদিকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষগুলো পাচ্ছে বসবাসের স্থায়ী ঠিকানা, অন্যদিকে এ পল্লী রূপ নিচ্ছে দর্শনীয় পর্যটনে।

এই আদিবাসী পল্লী গড়ে উঠছে দেশের সীমান্তবর্তী উপজেলা তেঁতুলিয়া উপজেলার মাঝিপাড়া এলাকায় ডাহুক নদীর তীরে। এই পল্লী গড়ে ওঠার মাধ্যমে এ জনপদের শতভাগ আদিবাসী পাচ্ছেন বসবাসের জন্য বাড়ি। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে উঠছে এই পল্লী। পর্যটন এবং আদিবাসী সংস্কৃতিকে সংরক্ষণের কথা মাথায় রেখে এই গৃহায়ণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। ১৮টি আদিবাসী পরিবারের মাথা গোঁজার ঠাঁই হচ্ছে এই পল্লীতে। জানা যায়, এখানকার আদিবাসীরা অধিকাংশই চা শ্রমিক।

চা-বাগানের পাশে ঝুপড়ি তুলে বসবাস করতেন তারা। ছিল না নিজের বলতে বাড়িঘর। এ উপজেলায় ৮০টি আদিবাসী পরিবার রয়েছে। ইতিমধ্যে ৬২টি পরিবারকে বাড়ি বরাদ্দ দিয়ে আশ্রয়ণ করা হয়েছে। বাকি ১৮টি আদিবাসী পরিবার এই আদিবাসী পল্লীতে পরিবার পরিজনসহ বসবাস করবেন। এখানে সরকারি খরচে ঘর করে দেওয়ার পাশাপাশি থাকবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, নিরাপদ পানি ও স্বাস্থ্যকর স্যানিটেশন। আদিবাসীদের ধর্মীয় প্রার্থনার জন্য গড়ে তোলা হবে নান্দনিক উপসনালয় ও পাঠাগার। শিশুদের জন্য গড়ে তোলা হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

আদিবাসীদের ভাষা ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ ও বিকাশের জন্য সংস্কৃতি কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। কর্মসংস্থানের জন্য তাদের কমিউনিটি ট্যুরিজমের আওতায় আনা হবে। প্রতিষ্ঠা করা হবে লোক জাদুঘর। পর্যটকদের জন্য নির্মাণ করা হবে গোলঘর, উন্মুক্ত ব্রিজ ও থাকার ব্যবস্থা। পর্যটকদের চিত্তবিনোদনের জন্য আদিবাসী সংস্কৃতির নানা অনুষঙ্গ পরিবেশন করবে শিল্পীরা।

মাঝিপাড়া এলাকার রতন সরেন জানান, এরকম পরিবেশে নিজের বাড়ি হবে এটা কখনই ভাবিনি। চায়ের বাগানে পাশে ঝুপড়ি ঘর তুলে পরিবার- পরিজন নিয়ে অনেক কষ্টে বসবাস করতাম। এখন নতুন বাড়ি পাওয়ার আনন্দে বুক ভরে গেছে। আমরা পেলাম নতুন স্থায়ী ঠিকানা। সৃষ্টিকর্তা যেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যুগ যুগ ধরে সুস্থ্যতার সহিত বাচিয়ে রাখেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শতভাগ গৃহায়ণ প্রকল্পে এই প্রথম আদিবাসীদের জন্য শতভাগ আশ্রয়ণ সম্পন্ন হলো। এই পল্লী গড়ে উঠলে আদিবাসীদের শতভাগ গৃহায়ণ ও সম্ভাবনাময় পর্যটন শিল্পের বিকাশে যোগ হবে নতুনমাত্রা।

 

আরও খবর

Sponsered content

Powered by